কলকাতা: সাবান কেস পরিষ্কার না করে তাতে দিনের পর দিন সাবান রাখছেন? এর ফল কিন্তু ভয়ঙ্কর হতে পারে৷ কারণ, কারণ, বহু দিন সাবান কেস পরিষ্কার করা না হলে, তাতে জল জমতে থাকে৷ আর সেই জমা জলে সাবান রাখলে আদ্রতার জেরে স্বাভাবিকভাবেই ক্ষতিকারক জীবাণু-ব্যাকটেরিয়াদের ভিড় বাড়তে থাকে। সাবানে জমতে থাকা ডেড সেলগুলো হয়ে ওঠে ব্যাকটেরিয়াদের উপাদেয় খাদ্য। এমনটা চলতে থাকলে কয়েকদিনের মধ্যেও ওই সাবান কেসে রাখা সাবান হয়ে ওঠে ব্যাকটেরিয়াদের আঁতুড়ঘর।
আরও পড়ুন- প্রিয় সারমেয়টি ক্যানসারে ভুগছে না তো? কোন লক্ষণগুলি মারণরোগের ইঙ্গিত
এ তো না হয় গেল ব্যকটেরিয়ার উপদ্রবের কথা৷ কিন্তু, এক সাবান কি অনেকে ব্যবহার করা উচিত?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এক সাবান অনেকে ব্যবহার না করাই ভালো। বিশেষ করে বয়স্ক ও শিশুদের ক্ষেত্রে এটা বিশেষ ভাবে প্রযোজ্য৷ কারণ, শিশু ও বয়স্ক, উভয়েরই ইমিউনিটি শক্তি খুব কম৷ তাই ক্ষতিকর জীবাণুদের টার্গেট হয়ে ওঠে তারা৷ এতে ইনফেকশনের আশঙ্কা বাড়ে। এছাড়াও ক্যানসার রোগীদের অন্যের সাবান না ছোঁয়াই ভালো৷ কারণ, তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটাই কম৷ এক সবানে দ্রুত সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা থেকে যায়৷
তবে বাড়ির অন্যরা চাইলে একই সাবান ব্যবহার করতেই পারেন। এতে বিশেষ কোনো ক্ষতি নেই। ১৯৬৫ সালে হওয়া একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, সাবানে উপস্থিত ব্যাকটেরিয়া সহজেই এক জনের থেকে অন্য জনের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে না। তা সত্ত্বেও অপরিচিত ব্যক্তির সাবান ব্যবহার না করাই ভালো।
এই সমস্ত সমস্যা থেকে নিস্তার পেতে সাবান ছেড়ে লিকুইড সোপ ব্যবহার করতেই পারেন। এতে করে সংক্রমণের আশঙ্কা অনেকটাই কম থাকে। কারণ, একই পরিবারের সকল সদস্য যদি একই বোতল থেকে লিকুইড সাবান ব্যবহার করেন, তাতেও ইনফেকশন ছড়ানোর আশঙ্কা প্রায় থাকে না বললেই চলে।
সাবান কি সত্যিই জীবাণুনাশক?
সাবান তৈরি হয় জল এবং ফ্যাটের মলিকিউল থেকে৷ এই মলিকিউল জীবানু এবং অন্যান্য ক্ষতিকারক উপাদানগুলোকে ধুয়ে সাফ করে দেয়৷ স্নানের সময় সাবান ব্যবহার করলে হাতে এবং শরীরে জমে থাকা জীবানু-ব্যাকটেরিয়া সব পরিষ্কার হয়ে যায়। তাই সুস্থ থাকতে হলে প্রতিদিন সাবান মাখুন, তবে তা যেন হয় লিকুইড সোপ। কিন্তু, একান্তই তা না হলে সাবান যেন থাকে জীবাণুমুক্ত৷ কী ভাবে সাবান জীবানুমুক্ত রাখবেন?
একান্তই যদি লিকুইড সোপ কিনতে মন না চায়, তাহলে এই নিয়মগুলো আপনাকে মানতেই হবে। এতে করে সাবান থেকে কোনো সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা আর থাকবে না। নিয়মগুলো হলো-
১. সাবান ব্যবহারের আগে ভালো করে সেটা ধুয়ে নিন।
২. লুফা (শরীর পরিষ্কার করার কাপড় জাতীয় জিনিস)-র ব্যবহার এড়ায়ে চলুন। কারণ এতেও জীবাণুরা বাসা বাধে। আর যদি একান্তই করতে হয়, তাহলে ব্যবহারের পর তা ভাল করে ধুয়ে এবং শুকিয়ে রাখুন৷
৩. সাবানের ট্রে বা সোপ কেস যেন শুকনো থাকে। সেখানে জল জমলে সাবানের গায়ে ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যাও কিন্তু বাড়তে থাকবে।
৪. খুব বেশি দিন একই সাবান ব্যবহার করবেন না৷